আমি চিরকালই ধর্ষণের ক্ষেত্রে মৃত্যদন্ডেরই সমর্থক।
অবশ্যই হত্যার বদলে হত্যার মধ্যযুগীয় বর্বরতা’র রীতিতে বিশ্বাসী নয়।
কিন্তু ভারতীয় আইনে বিরলতম অপরাধের শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদন্ডের যে বন্দোবস্ত আছে আমি তার কট্টর সমর্থক।
আশা করি, এটা আপনারাও স্বীকার করবেন যে কোন সভ্য সমাজে শিশু ধর্ষণ, গণধর্ষণ বা ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনা বিরল অপরাধ হিসাবেই থাকা উচিত।
নাকি, মৃত্যুদন্ডের বিরোধী তথাকথিত মানবতাবাদীরা চান এসব জঘন্য অপরাধ আমাদের জীবনে নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে উঠুক?
অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, "মৃত্যুদণ্ড দিলেই কি ধর্ষণ বন্ধ হয়ে যাবে?"
কেউ কেউ তো আবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন, "আপনি গ্যারান্টি দিতে পারেন যে মৃত্যুদণ্ড দিলেই ধর্ষণের ঘটনা শূন্য হয়ে যাবে?"
এই প্রশ্নের জবাব দিতে গেলে মনুষ্যচরিত্র নিয়ে কিছু বিষয় জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
আচ্ছা, একটি বার ভাবুন তো মানুষের সবচেয়ে বড় ভয় কী?
মৃত্যু!!!
আমি, আপনি, আমরা কেউই মরতে চাইনা।
মৃত্যু জীবনের অটল সত্য জেনেও আমরা তা ভুলে থাকার ভান করি।
কিন্তু তারপরও এই সমাজে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা নিজের আদর্শের জন্য প্রাণ দিতে পিছপা হননা।
এখানে আদর্শ বলতে আমি কোন বিশেষ মতবাদের প্রতি আস্থাশীল বোঝাতে চেয়েছি।
সেই আদর্শ আমাদের চোখে প্রগতিশীল বা প্রতিক্রিয়াশীল দুটোই হতে পারে কারণ মতাদর্শ বিষয়টি আপেক্ষিক।
আমার চোখে যিনি বিপ্লবী আপনার চোখে তিনি সন্ত্রাসবাদী হতেই পারে আবার উল্টোটাও হতে পারে।
সোজাভাবে বললে, কোন বিশেষ আদর্শে বিশ্বাসী মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ বাদে অধিকাংশ মানুষই মরতে ভয় পায়।
প্রতিদিন আমাদের চারপাশে যে সকল ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তার অন্তত ৯৭% (আসলে হয়তো ১০০% ই) এসকল ভোগী, লম্পট মানুষের দ্বারাই হয়।
আর এই শ্রেণীর মানুষের ১০০% ই ভীতু, স্বার্থপর হয়।
তাদের প্রাণে মৃত্যুভয় থাকবেনা তা অসম্ভব।
প্রশ্ন হলো, এতসব জেনেও তারা তাহলে ধর্ষণ করে কেন?
কারণ তারা জানে এদেশের পুলিশ, প্রশাসন কে বছরের পর বছর বিশেষ কারণেই মেরুদণ্ডহীন, অপদার্থ করে রাখা হয়েছে।
অগণিত ধর্ষণের ঘটনা থানার চৌকাঠ পেরোয়না। যদি বা থানায় গেল তাহলেও সেখানে রিপোর্টই লেখা হয়না।
অপরাধী যদি ক্ষমতাশালী হয় তাহলে তো পুলিশ নিজেই তার এজেন্ট হয়ে নির্যাতিতা বা তার পরিবারকে নানাভাবে বিপদগ্রস্ত করে চাপ দিয়ে কেস ডিসমিস করতে চায়।
এমনকি ধর্ষণের রিপোর্ট লেখাতে এসে ধর্ষিতাকে থানার ভিতরেই ধর্ষিতা হতে হয়েছে এরকম ঘটনার কথা কান পাতলে শোনা যায়।
এতকিছুর পরেও যদি রিপোর্ট ফাইল হয়, তাহলে পুলিশ অপরাধী কে "খুঁজেই পায়না"।
তারপরও যদি ধরা পড়ল তখন বছরের পর বছর বিচার চলতে থাকে।
হয়তো লোয়ার কোর্ট মৃত্যুদন্ড দিল তাহলে হাইকোর্ট, তারপর সুপ্রিমকোর্ট আছে।
মৃত্যুদন্ড বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের রায়েও যদি মৃত্যুদণ্ড বজায় থাকে তাহলে অপরাধী রাষ্ট্রপতির কাছে সুযোগ পায়।
তথাকথিত কিছু মানবাধিকার কর্মী যারা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন তারাই পথসভা শুরু করেন, "কোন রাষ্ট্র কি তার নাগরিক কে বর্বরভাবে হত্যা করতে পারে?"
বন্ধুরা নিজেরাই বিবেচনা করুন, যেখানে ধর্ষিতা আত্মরক্ষার জন্য সামান্যতম সুযোগ পায়না সেখানে একজন নরপশু ধর্ষক, খুনি আত্মরক্ষার কতরকম সুযোগ সুবিধা পায়।
ভোগী, লম্পট অপরাধী যখন জানেই যে সে জঘন্যতম অপরাধ করেও আইনের সাথে
চু-কিতকিত খেলে বেঁচে যাবে, এমনকি ধরা পড়লেও প্রাণে মরবেনা তখন সে তো অপরাধ করবেই।
ধর্ষক নাবালক হলে তো মশাই (এদেশে আবার ধর্ষকরা নাবালকও হয়!) কথাই নেই।
জুভেনাইল কেস, তাই কয়েক বছর হোমে রেখে হাতে সেলাই মেশিন ধরিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ধর্ষণের মত এতবড় কাজ করেছে অন্তত একটা সেলাইমেশিন তো প্রাইজ দিতেই হয়।
যতদিন না ধর্ষণের ঘটনা কে দ্রুত বিচার করে মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করা হবে ততদিন এসব চলতেই থাকবে।
ধুর, ছাড়ুন তো মশাই!
এত ভেবে কী হবে?
কাগজে পড়লাম কোন এক ক্ষমতাসীন নেতা ভারতমাতার মূর্তি তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন তাই নিয়ে মশগুল থাকি।
হাজার হোক, আমার বাড়িতে তো কিছু হয়নি!!!
0 মন্তব্যসমূহ